যশোরের অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর পুড়াখালী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মৌমাছির অভয়ারণ্য, গুনগুন শব্দে মুখরিত আশপাশের এলাকা। মসজিদের দেওয়াল ও কার্নিশে ঝুলছে সারি সারি মৌচাক। গুনগুন শব্দে মুখরিত হয় ওঠে চারদিকে। প্রতিদিন মুসুল্লি ও মক্তবের শিক্ষার্থীরা চলাচল করছে। তবে মৌমাছি তাদের কোন ক্ষতি করছেনা। এ যেন মৌমাছির সাথে মুসল্লিদের এক নিবিড় বন্ধুত্ব।
মসজিদের মিনারে সুমধুর কণ্ঠে আজানের ধ্বনি, বাইরে মৌমাছির গুনগুন শব্দ মৌমাছিদের অভ্যর্থনায় যেন মসজিদে নামাজ পড়তে ঢোকেন মুসল্লিরা এবং সকালে কুরআন পড়তে আসে মক্তবের শিক্ষার্থীরা। প্রকৃতি আর মানুষের সেতুবন্ধনের এই অভূতপূর্ব দৃশ্য যশোরের অভয়নগর উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর পুড়াখালী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। লোকজন এটিকে মৌমাছির মসজিদ বলেই এলাকায় পরিচিতি পাচ্ছে । এই দৃশ্য দেখতে রোজ ছুটে আসছে মানুষজন। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে মুগ্ধ হচ্ছে দর্শনার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদের সম্মুখভাগে অসংখ্য মৌচাক। প্রতি বছর সরিষার মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি এসে এই মসজিদের দেওয়াল ও ছাদের কার্নিশে বাসা বাঁধে। বছর শেষে তারা আবার চলে যায় আপন গন্তব্যে। তবে এসব মৌচাক থেকে সংগৃহীত মধু বিক্রি করে মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।
অত্র মসজিদের সভাপতি শাহজাহান মোড়ল, বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এভাবে মসজিদের কার্নিশে মৌমাছি বাসা বাঁধে আছে আল্লাহর রহমতে তারা কেনো ক্ষতি করে না।
মসজিদের ইমাম হাফেজ বেলাল হোসেন বলেন, গত ১০ বছর ধরে মৌমাছি মসজিদের চারপাশে বাসা বেঁধে বসবাস করছে। তারা আমাদের কোনো ক্ষতি করে না, আমরাও তাদের কোনো ক্ষতি করি না। মাছিগুলো সরিষা ফুলের সময় আসে আবার গন্তব্যস্থলে চলে যায়। এসব মৌচাক থেকে সংগৃহীত মধু বিক্রি করে মসজিদের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হয়। এই মধু কেনার জন্য ক্রেতারা খুবই আগ্রহী।
মথুরাপুর মোড়ল পাড়া মসজিদের ইমাম, হাফেজ আখতারুজ্জামান বলেন, এই মসজিদে এমন মৌচাক দেখে খুবই ভালো লাগে অন্য কোথাও আসেপাশে এমন দৃষ্টান্ত দেখা যায়নি।
মসজিদের মুসল্লী জাহিদুল ইসলাম বলেন,পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে যাই মৌমাছি কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতি করে না, আমারা একেঅপরের বন্ধুসুলভ। মৌমাছি আল্লাহর এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। আল কোরআনে যেসব কীট-প্রতঙ্গের বর্ণনা এসেছে এর মধ্যে মৌমাছি অন্যতম।
খুলনা গেজেট/ টিএ